ললিতা সপ্তমী ব্রত (Lalita Saptami Vrat): হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ব্রত পালন করে থাকেন এই ধর্মের অনুসারীরা। তবে একটি উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্রত হল ললিতা সপ্তমী (Lalita Saptami) অথবা ললিতা জয়ন্তী (Lalita Jayanti) যা একটি হিন্দু উৎসব এবং ললিতা দেবীর জন্মবার্ষিকী তে তাঁর সম্মানে এই দিনটি উদযাপন করা হয়।
প্রতিদিনের পঞ্জিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে দেখুন (একদম ফ্রী)
শ্রী ললিতা দেবী ছিলেন শ্রীমতি রাধারানী এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সখী এবং অন্য সকল গোপিনী দের মধ্যে তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ ভক্ত। ললিতা সপ্তমীর ব্রত রাধা অষ্টমী ব্রতর ঠিক একদিন আগে এবং জন্মাষ্টমী উৎসবের ১৪ দিন পরে উদযাপিত হয়ে থাকে।
ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে এই ললিতা সপ্তমী ব্রত অনুষ্ঠিত হয় এবং মনে করা হয় যে এই শুভ সময়ে শ্রী ললিতা দেবী (Shri Lalita Devi) আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি এই দিন ভগবান কৃষ্ণ এবং রাধারানীর সঙ্গে একসাথে পুজিতা হন। তিনি তাঁর প্রিয় কৃষ্ণ এবং রাধারানির প্রতি অগাধ ভালোবাসা তার সাথে সাথে সর্বাধিক আবেগ অনুভব করতেন।
সেই কারণে তিনি অন্যান্য সখীদের সাথে সাথে নিজের একটি আলাদা পরিচিতি রেখেছিলেন। অন্যান্য যে সমস্ত সাতটি সখিগণ রয়েছেন তাঁরা হলেন তুঙ্গবিদ্যা, চিত্রলেখা, বিশাখা, ইন্দুলেখা, চম্পকলতা, রঙ্গদেবী এবং সুদেবী।
কেবলমাত্র ললিতা দেবীর পরিচালনায় সেবা কর্ম করতেন অন্যান্য সখীগণ। তাঁরা কৃষ্ণ ও রাধার সেবার জন্য তাঁদের অভিভাবিকা হিসেবে ললিতা দেবীকে সম্পূর্ণ নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধা জানাতেন। বৃন্দাবনে অবস্থিত ললিতা কুণ্ড ভক্তদের মুক্তি প্রদান করার জন্য বিখ্যাত।
সর্ব জায়গায় বৃন্দাবন ও ব্রজভূমিতে এমন অনেকগুলি মন্দির পাওয়া যায় যেখানে শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধারানী ললিতা এবং বিশাখা নামে দুইজন গোপীনি দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে আছেন। কিন্তু ভক্তগন ললিতা সপ্তমীর উপবাসও পালন করে থাকেন।
হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এই ব্রতের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছিলেন। এই ব্রত প্রধানত বিবাহিত দম্পতিরা তাঁদের সন্তানদের দীর্ঘ জীবন এবং স্বাস্থ্যের জন্য পালন করে থাকেন এবং সংসারে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধির জন্য এই ব্রত পালন হয়ে আসছে আজও পর্যন্ত। জন্মজয়ন্তী অথবা আবির্ভাব দিবস পালিত হওয়ার মতোই এই ললিতা সপ্তমী ব্রত পালন করে থাকেন ভক্তগণ।