Worldwide Bengali Panjika

Bipattarini Puja Vidhi – বিপত্তারিণী পূজা বিধি ও ব্রত পালন


বিপত্তারিণী পূজা (Bipattarini Puja): আষাঢ় মাসে বিভিন্ন পূজা অর্চনার মধ্যে বিপত্তারিণী ব্রত পালন করার এই বিষয়টি অনেকের কাছে খুবই আনন্দের। ছোটবেলায় এই ব্রত পালন করার মধ্যে একটি বিশেষ বিষয় হলো হাতে লাল সুতো বাধার প্রথাটি খুবই ভালো লাগার একটি বিষয়। আর বিশ্বাস করা হয় যে এই সুতো বেঁধে রাখলেই সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করবেন দেবী বিপত্তারিণী।

WhatsApp প্রতিদিনের পঞ্জিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে দেখুন (একদম ফ্রী)

আষাঢ় মাসের সোজা রথ থেকে উল্টো রথের মাঝখানে যে শনি অথবা মঙ্গলবার পড়ে সেই দিনই পালন করা হয় বিপত্তারিণী পূজা। বাংলার ঘরে ঘরে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়, কিভাবে বিপত্তারিণী পূজা করা হয় সেটা অনেকেই হয়তো জানেন আবার অনেকেই জানেন না।

Bipattarini Puja Vidhi - বিপত্তারিণী পূজা বিধি ও ব্রত পালন
Bipattarini Puja Vidhi – বিপত্তারিণী পূজা বিধি ও ব্রত পালন

বিপত্তারিণী ব্রত দেবী বিপত্তারিণীকে উৎসর্গ করা হয় যিনি মা কালীর একটি অন্যরূপ। রথ যাত্রার পরে এবং উল্টো রথের আগে বাংলায় আষাঢ় মাসে মঙ্গল ও শনিবার এই ব্রত পালন করা হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে যারা ব্রত পালন করেন তাঁরা দেবী বিপত্তারিণীর আশীর্বাদ পান এবং পরিবারকে সব ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন।

Shat Panchami Vrat: ষট পঞ্চমী ব্রত ও পূজা বিধি

শ্রী শ্রী বিপত্তারিণী ব্রত:

এই পূজা বলতে গেলে প্রায় প্রতি ঘরে ঘরেই হয়ে থাকে এবং এই পূজার সাথে জড়িয়ে রয়েছে একটি বিশেষ আবেগ যা হলো লাল সুতাতে ১৪ টি গিট সহ ১৪ টি দূর্বা ঘাস দিয়ে বাঁধা সুতা যা হাতে বেঁধে রাখলে সমস্ত বাধা বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, এমনটাই বিশ্বাস চলে আসছে বহুদিন আগে থেকেই।

ব্রত পালনকারী কে আগের দিন থেকে নিরামিষ আহার গ্রহণ করতে হবে এবং বাড়ির সকল সদস্যকে এই নিয়ম পালন করতে হবে। ব্রত পালনকারী ব্যক্তিদের হাতে এই সুতো বাধার পাশাপাশি বাড়ির সকল সদস্যের জন্য এই সুতা থাকে বরাদ্দ।

১৩ রকমের ফল, ১৩ রকমের ফুল ১৩ রকমের মিষ্টি সহকারে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। যাঁরা উপবাস পালন করেন তাঁদের কেও ১৩ টি খাবার অথবা ফল দিয়ে উপকার ভঙ্গ করতে হয়।

বিপত্তারিণী ব্রত পালন করার কিছু নিয়ম:

  • বিপত্তারিণী ব্রত যাঁরা পালন করবেন তাঁরা আগের দিন শুধুমাত্র নিরামিষ খাবার গ্রহণ করবেন। ব্রত পালন করার দিনে উপবাসকারী ব্যক্তি কোন খাবার খাবেন না। পূজার পরে এই উপবাস ভঙ্গ করতে হয়। নারীদের এই ব্রতর দিনে ব্রত করার সংকল্প নিতে হবে।
  • ব্রত পালন করার দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরিধান করতে হবে। সম্পূর্ণ ঘর ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে, তারপর গঙ্গাজল ছিটিয়ে পবিত্র করতে হবে।
  • এর সঙ্গে মা বিপত্তারিণীর পূজা করতে হবে, ১৩ ধরনের ফল, ফুল, মিষ্টি দেবীকে নৈবেদ্য হিসেবে নিবেদন করতে হয়।
  • বিপত্তারিণী দেবীকে জবা ফুল দিয়ে পূজা করা হয়, যা সৌভাগ্য বয়ে নিয়ে আসে এবং সংসারে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বজায় রাখে।
  • মহিলারা বাম হাতে ১৪ টি গিট সহ লাল রঙের একটি পবিত্র সুতো পরেন, যদি পুরুষরা ব্রত পালন করে থাকেন তাহলে তাঁদের ডান হাতে এই সুতো পরতে হয়। এছাড়া পূজা সম্পন্ন করার পর পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য এই দুর্বাঘাস দেওয়া ১৪ টি গিট সহ এই লাল সুতো বরাদ্দ থাকে, যা সকলের হাতে হাতে বেঁধে দেওয়া হয়, সকল বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
  • মা বিপত্তারিণীর ব্রত কথা মন্দিরের পুরোহীতরা পাঠ করে থাকেন এই দিন এবং সকল ভক্ত ও ব্রত পালনকারীরা শ্রবণ করে থাকেন।
  • প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে যাঁরা ব্রত পালন করেন তাঁরা দেবীর বিপত্তারিনীর আশীর্বাদ পান এবং পরিবারকে সকল প্রকার ঝামেলা থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন, আর প্রতিবছর এই পূজা পালন করার জন্য সংকল্প নিয়ে থাকেন।

Kamakhya Puja: কামাখ্যা দেবীর পূজা বিধি ও অম্বুবাচী যাত্রা

বিপত্তারিণী পূজার ক্ষেত্রে যেগুলি প্রয়োজন পড়বে:

  • বিপত্তারিণী ব্রত পালন করতে ১৩ টি ফল, ১৩ টি ফুল, ১৩ টি সুপারি এবং ১৩ রকম নৈবেদ্য প্রয়োজন হয়।
  • এই ব্রত পালন করার দিন চালের কোন খাবার খাওয়া যাবেনা, যেমন ধরুন ভাত, মুড়ি, চিড়ে প্রভৃতি।
  • এই দিন মহিলাদের অবশ্যই আলতা, সিঁদুর পরতে হবে। যাঁরা বিবাহিত রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সিঁদুর পরাটা বাধ্যতামূলক।
  • এই ব্রত পালন করার সাথে সাথে ১৪ টি গিট বাঁধা সুতো প্রয়োজন পড়ে এবং সেই সুতোয় ১৪ টি দুর্বাঘাস বাঁধারও নিয়ম রয়েছে।
  • এই পূজার দিন বাড়ির অন্য সদস্যরা অবশ্যই নিরামিষ আহার গ্রহণ করবেন অর্থাৎ এক কথায় এই দিন বাড়িতে কোনরকম আমিষ খাবার চলবে না।
  • ব্রত শেষ হওয়ার পর খাদ্য গ্রহণ করার যে নিয়ম সেটাও কিন্তু ১৩ টা করেই খেতে হবে।

Jagannath Rath Yatra Puja Vidhi: জগন্নাথ রথযাত্রা পূজা বিধি

বিপত্তারিণী ব্রত পালন করার উপকারিতা:

প্রতিটি ব্রত পালন করার ক্ষেত্রে শুভফল লাভ করা যায় ঠিকই, তবে বিপত্তারিণী পূজার ক্ষেত্রেও তেমন শুভ ফল লাভ করা যায়। এই ব্রত পালন করলে সংসার বিপদমুক্ত থাকে, পথে-ঘাটে কোনরকম বিপদ হয় না। জীবনে কোন রকম বাধা থাকলে সেটাও কেটে যায়, মা বিপত্তারিণী সকলের সকল বিপদ থেকে দূরে রাখেন এবং সকলের সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!