শ্রী শ্রী মনসা পূজা (Manasa Puja): হিন্দু ধর্মে পুরাণ অনুসারে মনসা দেবী হলেন শিবের স্বীকৃত কন্যা ও জরুতকারুর পত্নী। কোন কোন ধর্মগ্রন্থে আছে শিব নয় ঋষি কাশ্যপই হলেন মনসার পিতা। মনসা কে ভক্ত বৎসল বলে বর্ণনা করা হলেও যিনি তাঁর পূজা করতে অস্বীকার করেন তার প্রতি তিনি নির্দয়।
প্রতিদিনের পঞ্জিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে দেখুন (একদম ফ্রী)
জন্ম সংক্রান্ত কারণে মনসার পূর্ণ দেবীত্ব প্রথমে অস্বীকার করা হয়েছিল। তাই মনসার উদ্দেশ্য ছিল দেবী হিসেবে নিজের কর্তৃত্ব স্থাপন করা এবং একটি একনিষ্ঠ মানব ভক্ত মন্ডলী গড়ে তোলা।
বাংলায় মনসা পূজা:
সাধারণত মনসা দেবীর মূর্তি পূজা হয় না, সিজ বৃক্ষের শাখা তে, ঘটে অথবা সর্প বা সাপ আঁকা ঝাঁপি তে মনসার পূজা করা হয়। প্রধানত সর্প দংশনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মনসা পূজা করা হয়ে থাকে।
বাংলায় বনিক সম্প্রদায়ের মধ্যেও মনসা পূজার বিশেষভাবে প্রচলিত। কেননা চাঁদ সওদাগর যিনি প্রথম মনসার পূজা করেছিলেন তিনি ছিলেন একজন বণিক। এই কাব্যের নায়িকা বেহুলাও সাহা নামক এক শক্তিশালী বণিক সম্প্রদায়ের গৃহে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর সেই কারণে বণিক পরিবারে মনসা পূজার তোড়জোড় খুবই ধুমধাম ভাবেই হয়।
মনসা দেবীর পূজা:
আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার পরে যে পঞ্চমী তিথি থাকে তাকে নাগপঞ্চমী বলা হয়। নাগপঞ্চমীতে উঠানে সিজ গাছ স্থাপন করে মনসা পূজা করা হয়। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পঞ্চমী পর্যন্ত পূজা করার বিধান রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একমাস যাবত পূজা করা হয়। শুধুমাত্র শেষ দিনে পুরোহিত দিয়ে পূজা সম্পন্ন করা হয়। যেমন অনন্ত নাগ, শেষনাগ, বাসুকি প্রভৃতি, উদাহরণ স্বরূপ বিষ্ণুর মস্তকের উপরে থাকেন শেষনাগ।
ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পঞ্চমী পর্যন্ত যে মনসা পূজার বিধান রয়েছে সেই পূজা অনেকেই বাড়িতে ‘রান্না পূজা’ হিসেবে ও অনুষ্ঠিত করে থাকেন এবং এই দিন মনসা পূজার একটি বিশেষ রীতি প্রচলিত রয়েছে।