Worldwide Bengali Panjika

পদ্মনাভ একাদশী পূজা – Padmanav Ekadashi


পদ্মনাভ একাদশী (Padmanav Ekadashi) দ্বাদশী ব্রত (Dwadashi Vrat): হিন্দু ধর্ম অনুসারে অমাবস্যা, পূর্ণিমা, একাদশী, দ্বাদশী ব্রত এসবের গুরুত্ব রয়েছে অপরিসীম। তবে বিভিন্ন একাদশী, দ্বাদশী পালন করার পাশাপাশি এমন কিছু তিথি রয়েছে যেগুলি পালন করলে এবং সেই ব্রত যদি রাখা যায় তাহলে জীবনে অনেক বিপদ কেটে যাওয়ার পাশাপাশি পূণ্য অর্জন করা যায়। হিন্দু ধর্মে একাদশীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। একাদশী, দ্বাদশী ভগবান বিষ্ণু কে উৎসর্গ করা হয়।

WhatsApp প্রতিদিনের পঞ্জিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে দেখুন (একদম ফ্রী)

তবে একাদশীর দিন রীতি অনুযায়ী ভগবান বিষ্ণুর পূজা করা হয়, একাদশীর দিন ভগবান বিষ্ণুর সাথে মা লক্ষ্মীও পূজা পেয়ে থাকেন। একাদশী পালন করার সাথে সাথে এই ব্রত পালন করা হয়। কথিত আছে যে এই উপবাস পালনকারী ব্যক্তিকে যম লোকের অত্যাচার ভোগ করতে হয় না। শাস্ত্র অনুসারে একাদশী ব্রত রাখলে এবং দ্বাদশী ব্রত পালন করলে সমস্ত রকম পাপ থেকে মুক্তি ঘটে, এর সাথে সাথে সমস্ত রকমের মনস্কামনা পূর্ণ হয়, মনে করা হয় এই ব্রত করলে মৃত্যুর পর মোক্ষ প্রাপ্তি ঘটে।

পদ্মনাভ একাদশী পূজার সামগ্রী:

যেহেতু বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে এই ব্রত পালন করা হয়, যা পদ্মনাভ ব্রত হিসাবে সকলেই চিনে থাকবেন। সেক্ষেত্রে এই পূজায় যেগুলি প্রয়োজন পড়বে সেগুলি হল:-

  • শ্রীবিষ্ণুর চিত্র অথবা মূর্তি,
  • ফুল,
  • বিভিন্ন ধরনের ফল,
  • নারকেল,
  • লবঙ্গ,
  • ধূপ,
  • প্রদীপ,
  • তুলসী পাতা,
  • চন্দন এবং
  • বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন।

পদ্মনাভ একাদশী / দ্বাদশী ব্রত পালন করার নিয়ম:

এই ব্রত পালন করার ক্ষেত্রে ভগবান বিষ্ণুর পদ্মনাভ রূপের পূজা করা হয়। একাদশী তিথির দিন ভগবান বিষ্ণুর বিধি-বিধানের সঙ্গে পূজা করা হয়। মনে করা হয় যে এরকম ব্রত পালন করলে ব্যক্তির মনস্কামনা পূর্ণ হয়, আর সে ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলির প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল দিতে হবে, সেগুলি নিচে দেওয়া হল:-

  • সকালবেলায় স্নান করে শুদ্ধ কাপড় পরে প্রদীপ জ্বালিয়ে ভগবান বিষ্ণুর গঙ্গাজল দিয়ে অভিষেক করতে হবে।
  • ভগবান বিষ্ণু কে ফুল এবং তুলসী পাতা অর্পণ করতে হবে।
  • যদি সম্ভব হয় তাহলে এই দিন অবশ্যই উপবাস রাখতে পারেন ব্রত পালন করার জন্য।
  • পূজা সম্পন্ন হয়ে গেলে ভগবানের আরতি করতে হবে।
  • বিশেষ করে এই ব্রত পালন করার জন্য চাল, গম, মাশকলাই এর ডাল, ছোলা, যব এবং মসুর ডাল প্রভৃতি একাদশীর দিন আগে থেকেই ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।
  • এছাড়া বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে ভগবানকে শুধুমাত্র সাত্বিক জিনিসের ভোগ অথবা নৈবেদ্য অর্পণ করতে হবে।
  • তুলসী পাতা অবশ্যই অর্পণ করতে হবে, মনে করা হয় যে বিনা তুলসী পাতাতে ভগবান বিষ্ণু কোন ভোগ গ্রহণ করেন না।
  • এই দিন ভগবান বিষ্ণুর সাথে মা লক্ষ্মীরও পূজা অবশ্যই করতে হবে।
  • এই দিন যত বেশি সম্ভব ধ্যান ও জপ করতে হবে।
  • এই উপবাসে বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়।
  • এর পাশাপাশি রাত জেগে ভগবান বিষ্ণুকে স্মরণ করা উচিত।
  • দ্বাদশী তিথিতে সকালে ব্রাহ্মণদের খাদ্যশস্য দান এবং দক্ষিণা প্রদান করে তাঁদের অন্ন ভোজন করিয়ে এই উপবাসের সমাপ্তি ঘটাতে পারেন।
  • এই উপবাসের প্রভাবে ভক্তরা বৈকুন্ঠ ধাম লাভ করেন।

উপবাস এবং ব্রত পালন যেমন শরীরের দিক থেকে খুবই উপকারী হওয়ার পাশাপাশি মনের শান্তি এবং ঈশ্বরের কাছে নিজের মনের সকল প্রার্থনা জানানোর একটা মাধ্যম বলা যায়। সারা বছরে সমস্ত একাদশী দ্বাদশীর ব্রত পালন করার মধ্যে অনেকেই তাঁদের জীবনের শান্তি খুঁজে পান। আবার অনেকেই আছেন সারা বছর এই ব্রত পালন করার জন্য বেশিরভাগ সময়ই নিরামিষ ভোজন গ্রহণ করে থাকেন। একাদশীর ব্রত হোক অথবা দ্বাদশীর ব্রত, শ্রী বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা এই উপবাস, ব্রত পালনকারীকে তাঁদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!