Worldwide Bengali Panjika

ব্রাহ্মসমাজে ভাদ্র উৎসব – Brahmo Samaj Vadra Festival


ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা (Founder of Brahmo Samaj): রাজা রামমোহন রায়ের (Raja Rammohan Roy) নাম শোনেননি এমন ভারতীয় খুবই কম রয়েছেন। প্রথম ব্রাহ্মসমাজ মন্দির (Brahmo Samaj Temple) এবং ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা রামমোহন রায়। আদি ব্রাহ্মসমাজ (Adi Brahmo Samaj) স্থাপিত হয়েছিল ইংরেজি ১৮৩০ সালে এবং বাংলায় ১১ মাঘ ১২৩৬ সালে। রাজা রামমোহন রায় চেয়েছিলেন যে বিদেশীরা যাতে বুঝতে পারে যে হিন্দু ধর্ম কতটা সুমহান, কি বিশাল, কত ব্যাপক তার বিস্তার, হিন্দুরা পরম ব্রহ্মের উপাসনা করেন।

WhatsApp প্রতিদিনের পঞ্জিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে দেখুন (একদম ফ্রী)

১৮৬৯ সালের ২২ আগস্ট ১৭৯১ শতাব্দের ১২৭৬ বঙ্গাব্দের ৭ ভাদ্র রবিবার ভারত বর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজের মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। কলকাতা শহরে অবস্থিত জোড়াসাঁকো চিৎপুরের বিখ্যাত গুটকে কচুরি সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন এবং এখানে হাঁটা চলা করতে করতে মার্বেলের মূর্তি তৈরির দোকান গুলোর ঠিক আগে একটা ভাঙাচোরা পুরনো বাড়ির সামনে সাইনবোর্ডে দেখতে পাবেন আদি ব্রাহ্মসমাজের স্থাপিত হওয়ার তারিখ সহ একটি সাইনবোর্ড।

১৮১৭ সালে তখনো রামমোহন রাজা উপাধি পাননি তাঁর অনুরাগীদের এই একটি দল তৈরি হলো। তৎকালীন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সমবেত হলেন রামমোহনের বৈঠকখানায়। সমাজে এখন একটি নবজাগরণের দরকার নিশ্চিন্ত নিদ্রা থেকে টেনে তুলতে হবে ঘুমন্ত সমাজকে। এই সময় রাজা রামমোহন রায়কে বিশেষভাবে সাহায্য করেছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।

১২৩৬, ১১ মাঘ নতুন গৃহে ব্রহ্ম সমাজের কাজ শুরু হল, প্রথম প্রথম ভাদ্র মাসের শ্যাম বাৎসরিক উৎসব এখানে অনুষ্ঠিত হতো যা ‘ভাদ্র উৎসব’ (Brahmo Samaj Vadra Utsab) নামে পরিচিত এবং বর্তমানে সেটি ব্রাহ্মসমাজের ভাদ্র উৎসব হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। এখানে প্রচুর ব্রাহ্মণ নিমন্ত্রিত থাকতেন, তাঁদের দক্ষিণা দান করে বিদায় করা হতো। সমস্ত খরচ সামলাতে দ্বারকানাথ ঠাকুর, কালীনাথ এবং মধুর নাথ। তারপর ১৮৩০ সালের ২৩ জানুয়ারি এই বিশেষ দিনটিকে ব্রাহ্ম ধর্মাবলম্বীরা মাঘোৎসব হিসেবে পালন করতে থাকেন এই উৎসবকে।

সেই ব্রাহ্ম মন্দির অর্থাৎ যে বাড়িটিতে তখন মানুষের বিশেষ আনাগোনা ছিল, সেই বাড়িটি আজ বিপদজনক বাড়ির তকমা পেয়েছে। চারিদিকে সবকিছু ভেঙে ভেঙে পড়ছে। যে ধর্মান্তর রেখার জন্য রাজা রামমোহন রায় ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, রাজা রামমোহন রায়ের মৃত্যুর পর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর যে সমাজকে আদি ব্রাহ্মসমাজ রূপ দিয়ে তাকে জীবনভর আগলে রেখেছিলেন সেই ব্রাহ্মসমাজ সেই ব্রাহ্মণ মন্দির আজ সম্পূর্ণরূপে পরিত্যক্ত। আজও এই বাড়িটির এক ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!