Worldwide Bengali Panjika

আমলকী একাদশী ব্রত পালন – Amalaki Ekadashi


আমলকী একাদশী (Amalaki Ekadashi): পৌরাণিক ধারণা অনুযায়ী বিশ্বাস করা হয় যে, বিষ্ণুর মাধ্যমে আমলকী গাছের উৎপত্তি ঘটেছে। এই আমলকী গাছের একটি অংশে দেবতার বসবাস। আমলকী একাদশীর দিনে আমলকী গাছের তলায় বসে বিষ্ণুর পূজা করলে নারায়ন খুবই প্রসন্ন হন বলে এমন ধারণা চলে আসছে। মনে করা হয় আমলকী গাছের তলায় বসে নারায়ণ এর আরাধনা করলে হাজারটা গরু দান করার সমান পূণ্য অর্জন করা যায় এবং মৃত্যু ভয়ও কেটে যায়।

WhatsApp প্রতিদিনের পঞ্জিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে দেখুন (একদম ফ্রী)

আমলকী একাদশী ব্রত:

ব্রহ্মাণ্ড পুরানে মান্ধাতা বশিষ্ট্য সংবাদে ফাল্গুন মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর এই তিথি টির কথা বর্ণিত রয়েছে। ফাল্গুন মাসে চন্দ্র পাক্ষিকের একাদশী অর্থাৎ ১১ তম দিন শুক্লপক্ষ অথবা চন্দ্রচক্রের মোম পর্যায় কে বলা হয় আমলকী একাদশী। এই একাদশী ব্রতের নামকরণ করা হয়েছে আমলা অথবা আমলকী থেকে, ভারতীয় চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমলার ঔষধি গুণের জন্য খুবই পরিচিত, যা আমলকী হিসেবেই অনেকেই চিনবেন।

আমলকী একাদশী ব্রত পালনের নিয়ম:

  • প্রথমত একাদশী তিথিতে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে, যদি ব্রহ্ম মুহূর্তে ঘুম থেকে উঠতে পারেন তাহলে খুবই ভালো।
  • সকালে উঠেই স্নান করুন এবং পরিষ্কার কাপড় পরে এই ব্রত পালনের সংকল্প গ্রহণ করুন।
  • যতক্ষণ আপনি উপবাস পালন করবেন ততক্ষণ ব্রহ্মচর্য বজায় রাখুন।
  • পেঁয়াজ, রসুন, মাংস, মাছ, চাল, গম, মুসুর ডাল এবং ডাল খাওয়া যাবে না এই দিন।
  • অ্যালকোহল এবং নেশা জাতীয় বিভিন্ন দ্রব্য এড়িয়ে চলতে হবে।
  • উপবাস পালন করলে ফল, দুধ, সাবুদানার খিচুড়ি, পুরি অথবা পরোটা, লুচি ইত্যাদি খেতে পারেন।
  • গরিব-দুঃখীদের মধ্যে খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দান করতে পারেন আপনার সাধ্য অনুসারে।
  • সারাদিন “ওম নমঃ ভাগবতে বাসুদেবায় নমঃ” এই মন্ত্র জপ করুন।
  • একাদশী তিথিতে পূজা করার পর বিষ্ণুর সহস্রনাম, ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা স্তোত্র এবং আমলকী একাদশীর ব্রতকথা পাঠ করুন।

আমলকী একাদশীর শুভ ফল লাভ:

আমলকী একাদশী ব্রত পালন করলে যে কাজগুলি করলে শুভ ফল লাভ করতে পারবেন:

১) এই শুভদিনে আমলকী খাওয়া, আমলকী দর্শন করা এবং আমলকী গাছের তলায় রাত্রি জাগরণ করলে শুভ ফল পাবেন।

২) একাদশীর দিন আমলকী গাছের তলায় রাত জাগরণ করলে সহস্র গাভী দান করার মত পূণ্য ফল লাভ হয়।

৩) এই গাছের স্মরণ মাত্র গরু দানের পূণ্য অর্জন হয়, এই ফল দর্শনে তার দ্বিগুণ ফল এবং এই ফল ভক্ষণ করলে তিনগুণ ফল লাভ হয়।

৪) এই গাছে ব্রহ্মা-বিষ্ণু আর মহেশ্বর সর্বদাই অবস্থান করেন, এর প্রতিটি শাখা-প্রশাখা ও পাতায় ঋষি দেবতা ও প্রজাপতিগণ বাস করেন। তাই এই গাছ বাড়িতে থাকাও খুবই শুভ বলে মনে করা হয়।

৫) যাঁরা আমিষ আহার গ্রহণ করেন তাঁরা একাদশীর আগের দিন অর্থাৎ দশমী, একাদশী এবং দ্বাদশী এই তিন দিন নিরামিষ আহার গ্রহণ করবেন।

৬) দশমীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে ফুল নিবেদন করে সংকল্প করুন। পরের দিন খুবই ভক্তি ও নিষ্ঠার সাথে সকল নিয়ম পালন করে আমলকী একাদশী ব্রত পালন করুন।

একাদশী তিথির পরের দিন:

একাদশী তিথির পরের দিন উপবাস অথবা ব্রত ভাঙ্গার পর সকালে যে নির্দিষ্ট সময় দেওয়া থাকে সেই সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশস্য ভগবানকে ভোগ নিবেদন করে একাদশীর পারণ মন্ত্র তিনবার ভক্তি করে পাঠ করতে হয়। এরপর প্রসাদ গ্রহণ করতে হবে আর অবশ্যই প্রসাদ গ্রহণের সাথে সাথে পারণ করা একান্ত ভাবে দরকার না হলে কিন্তু এই একাদশী ব্রত পালনের পূর্ণ ফল লাভ হবে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!