Worldwide Bengali Panjika

মহা অষ্টমীতে বলি প্রথা – Ashtami Bali Pratha


মহা অষ্টমীতে বলি প্রথা (Ashtami Bali Pratha): দুর্গাপূজা এবং এর সাথে সাথে যে কোন শক্তির পূজাতে বলি দেওয়ার প্রথা অনেক প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত রয়েছে। তবে হিন্দু ধর্মে সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপূজাতে মহা অষ্টমীতে এই বলি প্রথার কথা সকলেই কম বেশি জানেন।

WhatsApp প্রতিদিনের পঞ্জিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে দেখুন (একদম ফ্রী)

সনাতন ধর্মে এখন বর্তমানে পশু বলি প্রথা দৃষ্টিকটু মনে হলেও বেদ সহ সনাতন শাস্ত্রে বলি নিষিদ্ধ নয়। ঋকবেদ সংহিতায় বলির পশু অশ্বের উদ্দেশ্য বলা হয়েছে:- “দেবতাদের উৎসর্গ করার পরে উৎসর্গিত পশুটি দেবতাদের নিকটে গমন করে, কিন্তু প্রশ্নটিকে বলি প্রদানের সময়ে তার প্রিয় দেহটিকে অধিক ক্লেশ প্রদান করা বাঞ্ছনীয় নয়।

খড়ক যেন পশুটি শরীরে অধিকাংশ সময় না থাকে এবং কোন মাংস লুলুছেদন করার ক্ষেত্রে অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা যেন সেই বলি কর্ম সম্পাদন না করা হয়।” সহজ ভাষায় বলতে গেলে সেই পশুটিকে কোন রকম কষ্ট না দিয়েই খুব কম কষ্টের মধ্যে দিয়ে বলি দিতে হবে। বলির পশুটিকে ছেদন করতে হবে, দেবতাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত পশুকে বলি প্রদান করলে তা কখনো হিংসা হয় না বরং তা হিংসারহিত কর্ম বলে মনে করা হয়।

বলি দেওয়া যজ্ঞের পশু উত্তম পথে দেবতাদের কাছে গমন করে, মুক্ত হয় এর মাধ্যমে যজমান শোভন গো অশ্ব সমৃদ্ধ এবং পুত্র সন্তান যুক্ত, বিভিন্ন জগত পোষক, ধন এবং প্রভুত্ব বা শারীরিক বল লাভ করে থাকেন।

এছাড়া দেবতাদের উদ্দেশ্যে পশু বলি দেওয়ার পরে বলি দেওয়া পশু যে মুক্ত হয়ে সুগম যানে করে সুন্দর পথে দেবতাদের কাছে গমন করে এই বিষয়টি ঋগ্বেদ সংহীতার ন্যায় শুক্ল যজুর্বেদ সংহিতাতেও বর্ণিত রয়েছে। এছাড়া বেদ সহ সনাতন অধিকাংশ শাস্ত্রে পশুবলির কথা থাকলেও শুধুমাত্র বৈষ্ণব দর্শনে পশু বলির আবশ্যকতা পাওয়া যায় না। এর অন্যতম কারণ বৈষ্ণব দর্শন ও উপাসনায় অহিংসা তত্ত্বের প্রভাব আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে দক্ষিণ ভারতের ঐতিহাসিকভাবে নিরামিষাসী প্রভাব খুবই প্রবল।

সেই অনুসারে প্রাচীনকালে পশুবলির প্রথা প্রচলিত থাকলেও প্রথা অনুযায়ী এখন বর্তমানে লাউ, কুমড়ো, চাল কুমড়ো, আঁখ এই সমস্ত ফল সবজি দিয়ে মহাষ্টমীতে দেবীর সামনে বলি দেওয়ার এই প্রথাটি এখনো প্রচলিত রয়েছে।

হিন্দু ধর্মে ধর্মীয় আছে অনুষ্ঠানের মধ্যে, পূজা পার্বণ এর মধ্যে দুর্গোৎসব সবচেয়ে বড় উৎসব এবং দুর্গাপূজা সকলের কাছে অন্য ধর্মীয় আচারের থেকেও অনেক বেশি আকর্ষণীয়। মহা অষ্টমীতে সন্ধি পূজার এই মাহেন্দ্রক্ষণে কেউ কেউ বলি দিয়ে থাকেন আবার কেউ কেউ সিঁদুর সিক্ত এক মুঠো মাসকলাই ও বলি দেন। তবে সবকিছুই কিন্তু প্রতিকী হিসেবে দেখা হয়, আগে মহিষ বলি দেওয়ার প্রথা থাকলেও তা বর্তমানে প্রায় বিলুপ্ত বলা যায়।

কেননা অনেক জায়গায় কুমড়ো, লাউ, চাল কুমড়া, আঁখ বলি দেওয়ার রীতি ও প্রথা মেনে চলা হয় এখনও পর্যন্ত এবং ভবিষ্যতেও মেনে চলা হবে। সর্বকালের সর্বক্ষণের দুষ্ট এর দমন হয় দেবীর দ্বারা, আর সে ক্ষেত্রে এই দিনেই বলি দেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!